তৃতীয় প্রজন্মের মোবাইল প্রযুক্তির (থ্রিজি) উন্মুক্ত নিলামে ৪ হাজার কোটি টাকার তরঙ্গ বিক্রি। শুরু হলো থ্রিজির যুদ্ধ।



তৃতীয় প্রজন্মের মোবাইল প্রযুক্তির (থ্রিজি) উন্মুক্ত নিলামে ৪ হাজার কোটি টাকার তরঙ্গ বিক্রি। শুরু হলো থ্রিজির যুদ্ধ।

দেশের মোবাইল ফোন অপারেটরগুলোর মধ্যে এবার শুরু হলো থ্রিজির যুদ্ধ। তৃতীয় প্রজন্মের মোবাইল প্রযুক্তির (থ্রিজি) নিলামে অংশগ্রহণকারী চার বেসরকারি মোবাইল অপারেটর মিলে ২৫ মেগাহার্টজ স্প্রেকটাম (তরঙ্গ) কিনেছে। উন্মুক্ত নিলামে প্রতি মেগাহার্টজ তরঙ্গের মূল্য ২১ মিলিয়ন বা দুই কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার উঠেছে। এই হিসাবে ২৫ মেগাহার্টজ তরঙ্গের বিপরীতে সরকারের আয় হবে ৪ হাজার ৮১ কোটি টাকা। 


রোববার সকালে রাজধানীর রূপসী বাংলা হোটেলে বহুল আলোচিত থ্রিজি নিলাম অনুষ্ঠিত হয়। উন্মুক্ত নিলামে সিটিসেল ছাড়া বেসরকারি অন্য চার অপারেটর অংশ নেয়। এ সময় টেলিযোগাযোগমন্ত্রী সাহারা খাতুন ও বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। উন্মুক্ত নিলাম পরিচালনা করেন বিটিআরসির থ্রিজি পরামর্শক আবদুল্লাহ ফেরদৌস।

বিটিআরসির মোট ৫০ মেগাহার্টজের মধ্যে উন্মুক্ত নিলাম হয় ৪০ মেগাহার্টজ তরঙ্গের। ৫ মেগাহার্টজ করে মোট আটটি ব্লকে নিলাম পরিচালিত হয়। ৪০ মেগাহার্টজের মধ্যে চার অপারেটর মিলে ২৫ মেগাহার্টজ তরঙ্গ কিনে নেয়। আর অবিক্রিত থেকে যায় ১৫ মেগাহার্টজ তরঙ্গ। থ্রিজি নীতিমালা অনুসারে অপারেটররা ১৫ বছরের জন্য এই লাইসেন্স পাচ্ছে।

সবচেয়ে বেশি তরঙ্গ কিনেছে দেশের সবচেয়ে বড় মোবাইল অপারেটর গ্রামীণফোন লিমিটেড। ৫ মেগাহার্টজ করে মোট ১০ মেগাহার্টজের ৪ ও ৫নং দুটি ব্লক তরঙ্গ কিনেছে এই প্রতিষ্ঠানটি। থ্রিজি লাইসেন্সের বিপরীতে ১৯০০ ব্যান্ডের ৩৫ থেকে ৪০ ও ৪০ থেকে ৪৫ আপলিংক মেগাহার্টজ এবং ২১০০ ব্যান্ডের ২৫ থেকে ৩০ ও ৩০ থেকে ৩৫ ডাউনলিংক মেগাহার্টজ ব্যবহার করবে গ্রামীণফোন। নিলাম চলাকালীন সময়ে ডলারের বিনিময় হার ৭৭ দশমিক ৭৫ টাকা অনুযায়ী গ্রামীণফোনকে ১০ মেগাহার্টজ তরঙ্গের জন্য পরিশোধ করতে হবে প্রায় ১ হাজার ৬২৩ কোটি টাকা।

এছাড়া প্রতি মেগাহার্টজ একই দামে ৫ মেগাহার্টজ করে তরঙ্গ কিনেছে অপর তিন বেসরকারি মোবাইল অপারেটর রবি, এয়ারটেল ও বাংলালিংক। এজন্য প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে ৫ মেগাহার্টজ তরঙ্গের জন্য বিটিআরসিকে ৮১৬ কোটি টাকা পরিশোধ করতে হবে।

এর মধ্যে থ্রিজি লাইসেন্সের বিপরীতে ১৯০০ ব্যান্ডের ৫০ থেকে ৫০ আপলিংক ও ২১০০ ব্যান্ডের ৪০ থেকে ৪৫ ডাউনলিংক মেগাহার্টজ সমৃদ্ধ ৭নং ব্লক তরঙ্গ ব্যবহার করবে রবি। এয়ারটেল ১৯০০ ব্যান্ডের ৪৫ থেকে ৫০ আপলিংক ও ২১০০ ব্যান্ডের ৩৫ থেকে ৪০ ডাউনলিংক মেগাহার্টজ সমৃদ্ধ ৬নং ব্লক তরঙ্গ ব্যবহার করবে। এছাড়া বাংলালিংক ব্যবহার করবে ৮নং ব্লক তরঙ্গের অধীনে ১৯০০ ব্যান্ডের ৫৫ থেকে ৬০ আপলিংক ও ২১০০ ব্যান্ডের ৪৫ থেকে ৫০ ডাউনলিংক মেগাহার্টজ।

উন্মুক্ত নিলাম পর্বের আনুষ্ঠানিকভাবে সমাপ্ত ঘোষণা করেন বিটিআরসির কমিশনার (লিগ্যাল অ্যান্ড লাইসেন্সিং) আবদুস সামাদ।

নিলাম শেষে আনুষ্ঠানিক প্রেস ব্রিফিংয়ে বিটিআরসির চেয়ারম্যান সুনীল কান্তি বোস বলেন, এই নিলাম থেকে সরকারের মোট আয় হচ্ছে ৪ হাজার ৮১ কোটি টাকা। এছাড়া রাষ্ট্রায়ত্ত অপারেটর টেলিটক নিলামে ওঠা দর পরিশোধ করে (প্রতি মেগাহার্টজ ২ কোটি ১০ লাখ ডলার) ১০ মেগাহার্টজ থ্রিজি তরঙ্গ ব্যবহার করবে। এছাড়া অবিক্রিত তিনটি ব্লকে ১৫ মেগাহার্টজ তরঙ্গের বিষয়ে সরকার পরে সিদ্ধান্ত নেবে বলে তিনি জানান।

নিলামে অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রথম কিস্তিতে মোট টাকার ৬০ শতাংশ জমা দিতে হবে ৩০ দিনের মধ্যে। বাকি টাকা ১৮০ কর্মদিবসের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে। টাকা জমা দেয়ার ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে লাইসেন্স দেয়া হবে বলে সুনীল কান্তি বোস জানান। তবে ৬০ শতাংশ টাকা জমা দেয়ার পর থেকেই অপারেটররা থ্রিজি কার্যক্রম শুরু করতে পারবে বলে তিনি নিশ্চিত করেন।

চেয়ারম্যান বলেন, গাইডলাইন অনুযায়ী লাইসেন্স পাওয়ার ৯ মাসের মধ্যে সব বিভাগে থ্রিজি সেবা চালু করতে হবে। এতে ব্যর্থ হলে ৫০ কোটি টাকা জরিমানা গুনতে হবে। পরবর্তী সময়ে ১৮ মাসের মধ্যে ৩০ শতাংশ জেলায় এই সেবা চালু করতে হবে। এ পর্যায়ে সেবা দিতে ব্যর্থ হলে ৫০ কোটি টাকা জরিমানা এবং পরবর্তী সময়ে ৩৬ মাসের মধ্যে দেশের সব জেলায় থ্রিজি সেবা চালু করতে হবে। এ পর্যায়ে অপারেটররা ব্যর্থ হলে একই পরিমাণ অর্থ জরিমানা করা হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন, নিলামে প্রতিযোগিতা হতে পারত। কিন্তু প্রতিযোগিতার কোনো সুযোগ ছিল না। কারণ চার অপারেটরই অংশগ্রহণ করেছে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাংলালিংক মাত্র ৫ মেগাহার্টজ তরঙ্গ বরাদ্দ নিয়েছে। এটা দিয়ে ভালো কোনো সেবা এই প্রতিষ্ঠান দিতে পারবে না। কারণ তাদের গ্রাহক সংখ্যা অনেক বেশি। তবে এয়ারটেলের গ্রাহক কম হওয়ায় তারা কম তরঙ্গ বরাদ্দ নিয়েও ভালো সেবা দিতে পারবে। তবে আমরা নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কোয়ালিটির ওপর অনেক বেশি জোর দেব। চেয়ারম্যান আরও বলেন, নিলামে কত টাকায় বিক্রি হলো তা মূল বিষয় নয়। এটি একটি প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে বাজার মূল্য জানা যায়।

নিলাম অনুষ্ঠানে দুই ধাপে প্রথমে ১০ মেগাহার্টজ ও পরে পাঁচ মেগাহার্টজ তরঙ্গের জন্য নিলাম পরিচালনা করেন বিটিআরসির থ্রিজি পরামর্শক আবদুল্লাহ ফেরদৌস। নিলামে প্রতি মেগাহার্টজ তরঙ্গের ভিত্তিমূল্য ধরা হয় ২ কোটি ডলার।

১০ মেগাহার্টজ তরঙ্গের জন্য প্রথম বিডে গ্রামীণফোন ২ কোটি ১০ লাখ ডলারের ডাক দেয়। অন্য কোনো অপারেটর এই ডাকে অংশ না নেয়ায় ওই দরেই ১০ মেগাহার্টজ তরঙ্গ জিতে নেয় ৪ কোটি ৪৭ লাখ গ্রাহকের এ মোবাইল অপারেটর কোম্পানি। এ সময় আবদুল্লাহ ফেরদৌস জানতে চান, ওই দরে আর কেউ ১০ মেগাহার্টজ তরঙ্গ কিনতে রাজি আছে কিনা। কিন্তু কেউ তাতে সাড়া না দেয়ায় শুরু হয় নিলামের দ্বিতীয় ধাপ।

এ পর্যায়ে পাঁচ মেগাহার্টজ তরঙ্গের জন্য প্রথম ডাকে ২ কোটি ১০ লাখ ডলার দাম হাঁকেন বাংলালিংক, রবি ও এয়ারটেলের কর্মকর্তারা। এরপর আর কেউ দর বাড়াতে রাজি না হওয়ায় সেখানেই শেষ হয় দ্বিতীয় ধাপের নিলাম। এ নিলামের ফলে ১০ কোটি ৫০ লাখ ডলারে পাঁচ মেগাহার্টজ থ্রিজি তরঙ্গের লাইসেন্স পাবে বাংলালিংক, রবি ও এয়ারটেল।

দুই ধাপে ২৫ মেগাহার্টজের নিলাম হওয়ার পর বাকি ১৫ মেগাহার্টজ তরঙ্গও নিলামে তোলে বিটিআরসি। কিন্তু অংশগ্রহণকারী চার প্রতিষ্ঠানের কেউ আগ্রহী না হওয়ায় তা অবিক্রীত থেকে যায়।

২৯ আগস্ট নিলামে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে বিড আর্নেস্ট মানি জমা দেয় বেসরকারি এ চার মোবাইল ফোন অপারেটর। নিলামের জন্য যোগ্য বিবেচিত হলেও দেশের প্রথম ও একমাত্র সিডিএমএ অপারেটর সিটিসেল আর্থিক সমস্যারকারণে টাকা জমা দিতে ব্যর্থ হয়ে নিলাম থেকে ছিটকে পড়।
সূত্রঃ www.alokitobangladesh.com



পোস্টটি পড়ে আপনাদের কেমন লাগলো মন্তব্য করে জানাবেন।
সবাই অনেক ভালো থাকবেন।
@
হিমালয়
 

দেশের মোবাইল ফোন অপারেটরগুলোর মধ্যে এবার শুরু হলো থ্রিজির যুদ্ধ। তৃতীয় প্রজন্মের মোবাইল প্রযুক্তির (থ্রিজি) নিলামে অংশগ্রহণকারী চার বেসরকারি মোবাইল অপারেটর মিলে ২৫ মেগাহার্টজ স্প্রেকটাম (তরঙ্গ) কিনেছে। উন্মুক্ত নিলামে প্রতি মেগাহার্টজ তরঙ্গের মূল্য ২১ মিলিয়ন বা দুই কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার উঠেছে। এই হিসাবে ২৫ মেগাহার্টজ তরঙ্গের বিপরীতে সরকারের আয় হবে ৪ হাজার ৮১ কোটি টাকা। রোববার সকালে রাজধানীর রূপসী বাংলা হোটেলে বহুল আলোচিত থ্রিজি নিলাম অনুষ্ঠিত হয়। উন্মুক্ত নিলামে সিটিসেল ছাড়া বেসরকারি অন্য চার অপারেটর অংশ নেয়। এ সময় টেলিযোগাযোগমন্ত্রী সাহারা খাতুন ও বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। উন্মুক্ত নিলাম পরিচালনা করেন বিটিআরসির থ্রিজি পরামর্শক আবদুল্লাহ ফেরদৌস।

বিটিআরসির মোট ৫০ মেগাহার্টজের মধ্যে উন্মুক্ত নিলাম হয় ৪০ মেগাহার্টজ তরঙ্গের। ৫ মেগাহার্টজ করে মোট আটটি ব্লকে নিলাম পরিচালিত হয়। ৪০ মেগাহার্টজের মধ্যে চার অপারেটর মিলে ২৫ মেগাহার্টজ তরঙ্গ কিনে নেয়। আর অবিক্রিত থেকে যায় ১৫ মেগাহার্টজ তরঙ্গ। থ্রিজি নীতিমালা অনুসারে অপারেটররা ১৫ বছরের জন্য এই লাইসেন্স পাচ্ছে।

সবচেয়ে বেশি তরঙ্গ কিনেছে দেশের সবচেয়ে বড় মোবাইল অপারেটর গ্রামীণফোন লিমিটেড। ৫ মেগাহার্টজ করে মোট ১০ মেগাহার্টজের ৪ ও ৫নং দুটি ব্লক তরঙ্গ কিনেছে এই প্রতিষ্ঠানটি। থ্রিজি লাইসেন্সের বিপরীতে ১৯০০ ব্যান্ডের ৩৫ থেকে ৪০ ও ৪০ থেকে ৪৫ আপলিংক মেগাহার্টজ এবং ২১০০ ব্যান্ডের ২৫ থেকে ৩০ ও ৩০ থেকে ৩৫ ডাউনলিংক মেগাহার্টজ ব্যবহার করবে গ্রামীণফোন। নিলাম চলাকালীন সময়ে ডলারের বিনিময় হার ৭৭ দশমিক ৭৫ টাকা অনুযায়ী গ্রামীণফোনকে ১০ মেগাহার্টজ তরঙ্গের জন্য পরিশোধ করতে হবে প্রায় ১ হাজার ৬২৩ কোটি টাকা।

এছাড়া প্রতি মেগাহার্টজ একই দামে ৫ মেগাহার্টজ করে তরঙ্গ কিনেছে অপর তিন বেসরকারি মোবাইল অপারেটর রবি, এয়ারটেল ও বাংলালিংক। এজন্য প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে ৫ মেগাহার্টজ তরঙ্গের জন্য বিটিআরসিকে ৮১৬ কোটি টাকা পরিশোধ করতে হবে।

এর মধ্যে থ্রিজি লাইসেন্সের বিপরীতে ১৯০০ ব্যান্ডের ৫০ থেকে ৫০ আপলিংক ও ২১০০ ব্যান্ডের ৪০ থেকে ৪৫ ডাউনলিংক মেগাহার্টজ সমৃদ্ধ ৭নং ব্লক তরঙ্গ ব্যবহার করবে রবি। এয়ারটেল ১৯০০ ব্যান্ডের ৪৫ থেকে ৫০ আপলিংক ও ২১০০ ব্যান্ডের ৩৫ থেকে ৪০ ডাউনলিংক মেগাহার্টজ সমৃদ্ধ ৬নং ব্লক তরঙ্গ ব্যবহার করবে। এছাড়া বাংলালিংক ব্যবহার করবে ৮নং ব্লক তরঙ্গের অধীনে ১৯০০ ব্যান্ডের ৫৫ থেকে ৬০ আপলিংক ও ২১০০ ব্যান্ডের ৪৫ থেকে ৫০ ডাউনলিংক মেগাহার্টজ।

উন্মুক্ত নিলাম পর্বের আনুষ্ঠানিকভাবে সমাপ্ত ঘোষণা করেন বিটিআরসির কমিশনার (লিগ্যাল অ্যান্ড লাইসেন্সিং) আবদুস সামাদ।

নিলাম শেষে আনুষ্ঠানিক প্রেস ব্রিফিংয়ে বিটিআরসির চেয়ারম্যান সুনীল কান্তি বোস বলেন, এই নিলাম থেকে সরকারের মোট আয় হচ্ছে ৪ হাজার ৮১ কোটি টাকা। এছাড়া রাষ্ট্রায়ত্ত অপারেটর টেলিটক নিলামে ওঠা দর পরিশোধ করে (প্রতি মেগাহার্টজ ২ কোটি ১০ লাখ ডলার) ১০ মেগাহার্টজ থ্রিজি তরঙ্গ ব্যবহার করবে। এছাড়া অবিক্রিত তিনটি ব্লকে ১৫ মেগাহার্টজ তরঙ্গের বিষয়ে সরকার পরে সিদ্ধান্ত নেবে বলে তিনি জানান।

নিলামে অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রথম কিস্তিতে মোট টাকার ৬০ শতাংশ জমা দিতে হবে ৩০ দিনের মধ্যে। বাকি টাকা ১৮০ কর্মদিবসের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে। টাকা জমা দেয়ার ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে লাইসেন্স দেয়া হবে বলে সুনীল কান্তি বোস জানান। তবে ৬০ শতাংশ টাকা জমা দেয়ার পর থেকেই অপারেটররা থ্রিজি কার্যক্রম শুরু করতে পারবে বলে তিনি নিশ্চিত করেন।

চেয়ারম্যান বলেন, গাইডলাইন অনুযায়ী লাইসেন্স পাওয়ার ৯ মাসের মধ্যে সব বিভাগে থ্রিজি সেবা চালু করতে হবে। এতে ব্যর্থ হলে ৫০ কোটি টাকা জরিমানা গুনতে হবে। পরবর্তী সময়ে ১৮ মাসের মধ্যে ৩০ শতাংশ জেলায় এই সেবা চালু করতে হবে। এ পর্যায়ে সেবা দিতে ব্যর্থ হলে ৫০ কোটি টাকা জরিমানা এবং পরবর্তী সময়ে ৩৬ মাসের মধ্যে দেশের সব জেলায় থ্রিজি সেবা চালু করতে হবে। এ পর্যায়ে অপারেটররা ব্যর্থ হলে একই পরিমাণ অর্থ জরিমানা করা হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন, নিলামে প্রতিযোগিতা হতে পারত। কিন্তু প্রতিযোগিতার কোনো সুযোগ ছিল না। কারণ চার অপারেটরই অংশগ্রহণ করেছে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাংলালিংক মাত্র ৫ মেগাহার্টজ তরঙ্গ বরাদ্দ নিয়েছে। এটা দিয়ে ভালো কোনো সেবা এই প্রতিষ্ঠান দিতে পারবে না। কারণ তাদের গ্রাহক সংখ্যা অনেক বেশি। তবে এয়ারটেলের গ্রাহক কম হওয়ায় তারা কম তরঙ্গ বরাদ্দ নিয়েও ভালো সেবা দিতে পারবে। তবে আমরা নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কোয়ালিটির ওপর অনেক বেশি জোর দেব। চেয়ারম্যান আরও বলেন, নিলামে কত টাকায় বিক্রি হলো তা মূল বিষয় নয়। এটি একটি প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে বাজার মূল্য জানা যায়।

নিলাম অনুষ্ঠানে দুই ধাপে প্রথমে ১০ মেগাহার্টজ ও পরে পাঁচ মেগাহার্টজ তরঙ্গের জন্য নিলাম পরিচালনা করেন বিটিআরসির থ্রিজি পরামর্শক আবদুল্লাহ ফেরদৌস। নিলামে প্রতি মেগাহার্টজ তরঙ্গের ভিত্তিমূল্য ধরা হয় ২ কোটি ডলার।

১০ মেগাহার্টজ তরঙ্গের জন্য প্রথম বিডে গ্রামীণফোন ২ কোটি ১০ লাখ ডলারের ডাক দেয়। অন্য কোনো অপারেটর এই ডাকে অংশ না নেয়ায় ওই দরেই ১০ মেগাহার্টজ তরঙ্গ জিতে নেয় ৪ কোটি ৪৭ লাখ গ্রাহকের এ মোবাইল অপারেটর কোম্পানি। এ সময় আবদুল্লাহ ফেরদৌস জানতে চান, ওই দরে আর কেউ ১০ মেগাহার্টজ তরঙ্গ কিনতে রাজি আছে কিনা। কিন্তু কেউ তাতে সাড়া না দেয়ায় শুরু হয় নিলামের দ্বিতীয় ধাপ।

এ পর্যায়ে পাঁচ মেগাহার্টজ তরঙ্গের জন্য প্রথম ডাকে ২ কোটি ১০ লাখ ডলার দাম হাঁকেন বাংলালিংক, রবি ও এয়ারটেলের কর্মকর্তারা। এরপর আর কেউ দর বাড়াতে রাজি না হওয়ায় সেখানেই শেষ হয় দ্বিতীয় ধাপের নিলাম। এ নিলামের ফলে ১০ কোটি ৫০ লাখ ডলারে পাঁচ মেগাহার্টজ থ্রিজি তরঙ্গের লাইসেন্স পাবে বাংলালিংক, রবি ও এয়ারটেল।

দুই ধাপে ২৫ মেগাহার্টজের নিলাম হওয়ার পর বাকি ১৫ মেগাহার্টজ তরঙ্গও নিলামে তোলে বিটিআরসি। কিন্তু অংশগ্রহণকারী চার প্রতিষ্ঠানের কেউ আগ্রহী না হওয়ায় তা অবিক্রীত থেকে যায়।

২৯ আগস্ট নিলামে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে বিড আর্নেস্ট মানি জমা দেয় বেসরকারি এ চার মোবাইল ফোন অপারেটর। নিলামের জন্য যোগ্য বিবেচিত হলেও দেশের প্রথম ও একমাত্র সিডিএমএ অপারেটর সিটিসেল ‘আর্থিক সমস্যার’ কারণে টাকা জমা দিতে ব্যর্থ হয়ে নিলাম থেকে ছিটকে পড়ে - See more at: http://www.alokitobangladesh.com/first-page/2013/09/09/21158#sthash.wGrI27Wx.dpuf

No comments:

Post a Comment

Blog Archive