আপনার অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ও ট্যাব যেভাবে নিরাপদ রাখবেন।



কেমন আছেন সবাই। আশা করছি ভাল। আপনার পছন্দের স্মার্ট ফোনটির সুরক্ষা নিয়ে কিছু কথা বলব আজ।
আপনার দামি অ্যান্ড্রয়েড ফোন ট্যাবের ওপর এখন চোখ রাখছে দুর্বৃত্তরা। কীভাবে দুর্বৃত্তদের হাত থেকে সুরক্ষিত রাখবেন আপনার প্রিয় মোবাইল ফোনটি?
প্রযুক্তি গবেষকেরা বলছেন, অ্যান্ড্রয়েড এখন অন্যতম জনপ্রিয় মোবাইল প্ল্যাটফর্ম। অ্যান্ড্রয়েডের জনপ্রিয়তার একটি মূল কারণ হচ্ছে সহজ  কাস্টমাইজেশানের নানারকম অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহারের সুবিধা। কিন্তু অ্যান্ড্রয়েডে অনেক সমস্যার একটি হচ্ছে থার্ড পার্টি অ্যাপ্লিকেশন। অনেক সময় গুগলের প্লে স্টোরের বাইরে থেকেও অ্যাপ ডাউনলোড করা হয় যা অ্যান্ড্রয়েডকে ম্যালওয়্যার আক্রমণের ঝুঁকির মুখে ফেলে দেয়।
ইন্টারনেট সুরক্ষা পণ্য নির্মাতা ইসেটের গবেষকেদের মতে, স্মার্টফোন ট্যাবলেটে মানুষের নির্ভরতা বেড়েই চলেছে। ধরনের যন্ত্রে আমরা ব্যক্তিগত তথ্য বেশি বেশি করে সংরক্ষণ করে রাখছি যা আমাদের ব্যক্তিগত তথ্য চুরির ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলছে।


ব্যবহার করুন স্ক্রিন লক 
প্রতিটি অ্যান্ড্রয়েড ফোনে নিরাপত্তা হিসেবে স্ক্রিন লক করার সুবিধা রয়েছে। পিন, পাসওয়ার্ড কিংবা প্যাটার্ন লক পদ্ধতির মাধ্যমে আপনার পণ্যটিকে লক করে রাখতে পারেন। অ্যান্ড্রয়েডের সিকিউরিটি সেটিংসে গিয়ে লক সক্রিয় করা যায়। স্বয়ংক্রিয় বা নির্দিষ্ট সময় অন্তর লক করা বিষয়টিও সেট করা যায়

ডিভাইস এনক্রিপ্ট করুন
আপনার পণ্যের সব ডাটা এনক্রিপ্ট করার সুবিধা দেয় অ্যান্ড্রয়েড। অ্যান্ড্রয়েডের সিকিউরিটি সেটিংস থেকে ডাটা এনক্রিপ্ট করা যায়। এতে মোবাইল বা ট্যাব প্রতিবার চালু করার সময় ডাটা বা তথ্যে ঢুকতে আলাদা করে পাসওয়ার্ড পিন দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে। এনক্রিপশন করা থাকলে ফোন যদি দুর্বৃত্তের হাতে পড়ে এবং একবার বন্ধ করে তা আবার চালু করে তবে পিন বা পাসওয়ার্ড ছাড়া তথ্য চুরি করতে পারবে না। ডাটা এনক্রিপশন করলে ফোনের গতি কিছুটা কমে যেতে পারে

অফিসের কাজে নিজের পণ্য নয়
আপনার নিজের মোবাইল বা ট্যাব কী অফিসের কাজে ব্যবহার করেন। ইন্টারনেট নিরাপত্তা পণ্য নির্মাতা ইসেটের গবেষকেরা বলছেন, অফিসের কাজে নিজের পণ্য ব্যবহার করার সময় ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন না থাকার কারণে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ ক্ষেত্রেই ভাইরাস আক্রমণের শিকার হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়। তাই নিজের পণ্যটি অফিসের কাজে যখন ব্যবহার করা হবে তখন অফিসের তথ্যপ্রযুক্তি দল বা কর্মকর্তাদের কাছে পরামর্শ নিন এবং তাদের নির্দেশ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় তথ্য আপনার ফোনে জমা রাখুন
সচল করুন অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইস ম্যানেজার
যদি আপনার মোবাইল ফোনটি বেহাত হয়ে যায় তখন অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইস ম্যানেজার ফিচারটির কল্যাণে আপনার পণ্যটিকে গুগল ম্যাপে ট্র্যাক করতে পারবেন। ছাড়াও মোবাইল ফোনটি চালু থাকলে পূর্ণ ভলিউমে টানা পাঁচ মিনিট কল দিতে পারবেন। এমনকি দূর থেকেই আপনার সব তথ্য মুছে দিতে পারবেন। আপনার মোবাইল ফোনে ডিভাইস ম্যানেজার চালু রয়েছে কিনা তা পরীক্ষা করতে সেটিংস থেকে সিকিউরিটিতে যেতে হবে। সিকিউরিটি সেটিংসের ডিভাইস অ্যাডমিনিস্ট্রেটর থেকে আপনি ডিভাইস ম্যানেজার চালু করতে পারেন। 

স্পর্শকাতর তথ্য এসডি কার্ডে নয়
এসডি কার্ডে আপনার মোবাইলের ব্যক্তিগত কিংবা আর্থিক তথ্য জমা রাখার বিষয়ে সতর্ক থাকুন। এসডি কার্ডের তথ্য সহজে মুছে ফেলা এবং হাতিয়ে নেওয়া সহজ বলে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংরক্ষণে এসডি কার্ডে ভরসা না করাই ভালো। কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংরক্ষণ যদি করতেই হয় তবে তা ইন্টারনাল মেমোরিতেই করুন

অ্যাপ ডাউনলোড যেখান সেখান থেকে নয়
অপিরিচিতি কোনো উত্স থেকে অ্যাপ ডাউনলোড করবেন না। অ্যান্ড্রয়েডের জন্য গুগলের প্লে স্টোরের অ্যাপসই ডাউনলোড করুন। গবেষকেরা পরামর্শ দিয়েছেন, কেবল উত্স নিশ্চিত হয়ে এবং পরিচিত প্ল্যাটফর্ম থেকেই অ্যাপ্লিকেশন ডাউনলোড করুন। কোনো অ্যাপ্লিকেশন ইনস্টল করার আগে আপনার অনুমতি চাওয়া হচ্ছে কিনা তা খেয়াল করুন এবং অনুমতি দেওয়ার আগে অ্যাপসটির উত্স সম্পর্কে নিশ্চিত হন

তালা লাগান অ্যাপসের জন্যও
আপনার স্মার্টফোন বা ট্যাবে অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে অ্যাপস লক ব্যবহার করতে পারেন। গ্যালারি কিংবা মেসেজিংয়ের সুরক্ষা হিসেবে গুগল প্লে থেকে অ্যাপ লক ডাউনলোড করে নিতে পারেন। ধরনের অ্যাপ ব্যবহার করলে আপনাকে আলাদা করে পাসওয়ার্ড বা পিন কোড সেট করে দিতে হবে যাতে কোন নির্দিষ্ট অ্যাপ্লিকেশন চালু করতে গেলে আগে পাসওয়ার্ড খুলে তারপর ঢুকতে হয়

অ্যান্ড্রয়েড ফোন রুট করবেন না
ফোন রুট করা হলে কাস্টম অ্যান্ড্রয়েড রমের পাশাপাশি ক্ষতিকর অ্যাপসও ইনস্টল হয়ে যেতে পারে। রুট অ্যাকসেস সুবিধার অ্যাপ পণ্যের ফাইল সিস্টেমকে অন্যান্য ক্ষতিকর অ্যাপসের জন্য উন্মুক্ত করে দিতে পারে। ছাড়াও ফোন রুট করার বিষয়টি ফোন ওয়্যারেন্টির লঙ্ঘন হতে পারে

ব্রাউজিং করুন ছদ্মবেশে
আপনার অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন বা ট্যাব থেকে ব্রাউজ করার সময় ছদ্মবেশে ব্রাউজ করুন। যদি ক্রোম দিয়ে ব্রাউজ করেন তবে অবশ্যই গুগল অ্যাকাউন্ট থেকে সাইন আউট হয়ে ব্রাউজ করবেন। আপনার পণ্যটি যদি একাধিকজন ব্যবহার করেন তবে ইনকগনিটো মোড বা পরিচয় গোপন রেখে ব্রাউজ করাটাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। ক্রোম ব্রাউজার আপনার সার্চ ব্রাউজিংয়ের ইতিহাস সংরক্ষণ করে এবং আপনার সাইন- থাকা অন্যান্য ডিভাইসেও তা সিনক্রোনাইজ করে

অ্যান্ড্রয়েড সফটওয়্যার হালনাগাদ রাখুন
গুগল সফটওয়্যার আপডেট উন্মুক্ত করে যার মধ্যে বেশ কিছু নিরাপত্তা প্যাচ দেওয়া থাকে। ডিভাইস সেটিংস থেকে সফটওয়্যার আপডেটের বিষয়টি দেখে নেওয়া যেতে পারে। সেটিংসের  অ্যাবাউট ডিভাইস মেনু থেকে সিস্টেম আপডেটের বিষয়টি দেখে নেওয়া যায়

পোস্টটি পড়ে আপনাদের কেমন লাগলো মন্তব্য করে জানাবেন।
সবাই অনেক ভালো থাকবেন।
@
হিমালয়

No comments:

Post a Comment

Blog Archive